হিটলার ছোটবেলা থেকেই অনেক বেশি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। ছোটবেলা থেকেই তাঁর ইচ্ছা ছিল ভালো একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ার।হিটলার তখন ভিয়েনাতে বসবাস করতেন। হিটলার ভিয়েনার একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু আর্ট কলেজ থেকে তাকে বারবার বের হতে হয়েছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ ইহুদিদ স্টুডেন্টদের কারনে। তাছাড়া সেই কলেজের রেকটরও ইহুদি ছিলেন। হয়তোবা তখন থেকেই ইহুদিদের প্রতি হিটলারের এক প্রকার বিতৃঞ্চার জন্ম নিয়েছিল।
২০০৯ সালে জামার্নিতে প্রকাশিত জার্মান ইতিহাসবিদ ও প্রবীন সাংবাদিক ড: জে. রিকার-এর লেখা বই “নভেম্বর নাইন: হাউ ওয়ার্ল্ড ওয়ার ওয়ান লেড টু দ্য হলোকাস্ট” থেকে জানা যায় হিটলার প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের পরাজিত হওয়ার কারণ হিসেবে একমাত্র ইহুদিদের দায়ী করতো। ইহুদিরাই জার্মানদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে এই বিশ্বাস ছিল হিটলারের। এবং তার আরো দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, নভেম্বর ৯, ১৯১৮ সালে জামার্নির রাজতন্ত্রের বিলোপ ইহুদিদের দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল। তখন হিটলার বসবাস করতো মিউনিখে এবং সেখান থেকেই ইহুদিরা বিপ্লব করে রাজতন্ত্র ধ্বংস করেছিল। হিটলার সবসময় মনে করতো দেশ ইহুদিদের দ্বারা বিষাক্ত হয়ে উঠেছে এবং দেশের অভ্যন্তরে তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে ড: রিকার দ্বিমত পোষণ করেন হিটলারের এন্টিসেমিটিজম বা ইহুদি-বিদ্বেষের পূর্ববর্তী ধারণার সাথে যাতে বলা হয়েছে হিটলারের মনে ইহুদিদের বিরুদ্ধে ঘৃণার বীজ বপন হয়েছিল যখন ১৯০৭ সালে হিটলারের মা ক্লারা মারা যান একজন ইহুদি ডাক্তার এডওয়ার্ড ব্লোচ-এর অধীনে চিকিৎসারত অবস্থায়। তিনি লিখেছেন, হিটলার একমাত্র ভালোবাসতো তার মা ও জার্মান জনগণকে। তার মনের মধ্যে বিভ্রম সৃষ্টি হয়েছিল যে ইহুদিদের নির্মূল করতে পারলেই বিশ্ব জয় করতে পারবে। ড: রিকার হিটলারের অনেক বক্তৃতা বিশ্লেষণ করে উপরোক্ত যুক্তি খাঁড়া করেছেন। জার্মান পত্র-পত্রিকা এই বইটিকে গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যমূলক বলে অভিহিত ও প্রশংসা করেছে।
১৯৩০ সালের প্রথমদিকে হিটলারের নাৎসী বাহিনী জার্মানিতে ক্ষমতায় আসে। এবং ১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন। হিটলার জার্মানির জনগণকে বোঝাতে সক্ষম হন যে তিনি চ্যান্সেলর হলে দেশকে উনড়বতির পথে নিয়ে যাবেন এবং দেশের বিরুদ্ধে সকল প্রতিবন্ধকতা অচিরেই দূর করবেন। তখন প্রথম মহাযুদ্ধে জার্মানির শোচনীয় পরাজয় ও পরবর্তীতে গ্রেট ডিপ্রেশনের চাপে জনগণের অবস্থা ছিল করুণ। এডলফ্ হিটলাকে সকল জার্মান সমর্থন করে। ১০ লাখ ইহুদি নিধনে তাদের যে কোনো আপত্তি ছিল না তা সহজেই বোঝা যায়। কারণ জনগণের সমর্থন না থাকলে হিটলারের একার পক্ষে এত লোক হত্যা সম্ভব ছিল না এটা সহজেই অনুমেয়। চ্যান্সেলর হওয়ার পর হিটলার জার্মানদের অনেক সুযোগ সুবিধা দান করেন। জনগণকে সোসাল বেনিফিট দেন, ট্যাক্স কমান এবং সৈন্যদের বেতন ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধার প্রচুর বৃদ্ধি করেন। ইহুদিদের হত্যার ব্যাপারে জার্মানদের কোনো মাথাব্যথা না হওয়ার আরেক কারণ ছিল রাশিয়া। তারা মনে করতো রাশিয়াতে হরদম এটা হচ্ছে। জার্মান জনগণের স্বার্থে নাৎসী বাহিনী যা হত্যাযজ্ঞ করেছে তা তারা মনে করতো হিটলার তার জনগণকে ভালোবেসেই করেছে।
সংক্ষেপে ইহুদিদের প্রতি হিটলারের বিদ্বেষের কারণঃ
খ্রিস্টানদের মতে, তাদের ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিস্টকে হত্যা করে ইহুদিরা। এজন্য অনেক ইউরোপিয়ান খ্রিস্টানরা ইহুদীদের অপছন্দ করত।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির হারার কারণ হিসেবে ইহুদি জনগোষ্ঠীকে দায়ী করা হত। এই হারকে হিটলার সহ অনেক জার্মানরা মেনে নিতে পারে নি।
জার্মানরা নিজেদের সেরা আর্য জাতি হিসেবে মনে করত এবং ইহুদি জাতিদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবত। ইহুদিরা মার্ক্সের মতবাদ দিয়ে বিশ্বকে ভাগ করতে চায় এটিও হিটলারকে প্রভাবিত করে।
কি অবস্থা হতো আজ যদি এডলফ হিটলার বেঁচে থাকতো। বর্তমানে সারাবিশ্বে রাজত্ব করছে ইহুদীরা। পৃথিবীর মধ্যে ক্ষমতাসীন যে বড় বড় পদ গুলো রয়েছে, সেউ পদগুলো এখন ইহুদীরাই এখল করে রেখেছে। শাসন করছে সমস্ত পৃথিবী কে। আজ ইতিহাস পর্যালোচনা করে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করে হিটলার কোন অর্থবহ কাজ করেননি।