আমরা জেনেছি যে, ইশরাক নামাজ সূর্য উদিত হওয়ার ১৫/২০ মিনিট পরে এবং ফজর পরে একই জায়গায় বসে থাকতে হবে। আমার প্রশ্ন হল, কেউ যদি একই জায়গায় বসে না থেকে একটু হাঁটাহাঁটি বা ঘরের টুকটাক কাজ করে এবং ইশরাকের সময় হলে নামাজটা পরে নেয় তাহলে এতে কি ইশরাকের সওয়াব পাওয়া যাবে? দয়া করে এ সংক্রান্ত মাসআলাগুলো জানাবেন। সালাতুল ইশরাক অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ সালাত।
এ মর্মে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ﻣَﻦْ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟْﻐَﺪَﺍﺓَ ﻓِﻲ ﺟَﻤَﺎﻋَﺔٍ ، ﺛُﻢَّ ﻗَﻌَﺪَ ﻳَﺬْﻛُﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻄْﻠُﻊَ ﺍﻟﺸَّﻤْﺲُ ، ﺛُﻢَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ، ﻛَﺎﻧَﺖْ ﻟَﻪُ ﻛَﺄَﺟْﺮِ ﺣَﺠَّﺔٍ ﻭَﻋُﻤْﺮَﺓٍ *“যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে পড়ে, অতঃপর সূর্যোদয় অবধি বসে আল্লাহর যিকির করে তারপর দুই রাকআত নামায পড়ে, সেই ব্যক্তির একটি হজ্জ ও উমরার সওয়াব লাভ হয়।”* বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রসূল (সাঃ) বললেন, “পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ।” অর্থাৎ কোন অসম্পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব নয় বরং পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব। (তিরমিযী, সুনান, সহিহ তারগিব ৪৬১নং) উল্লেখ্য যে, এ হাদীসটি অনেক মুহাদ্দিস যঈফ বলেছেন। কিন্তু মুহাদ্দিস আলবানী রহ. এটিকে সহীহ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। একান্ত জরুরি প্রয়োজনে যদি কাউকে উঠতে হয় (যেমন, টয়লেটে যাওয়ার প্রয়োজন) আর প্রয়োজন সেরে পূণরায় এসে সালাতের স্থানে বসে দুআ, যিকির, কুরআন তিলাওয়াতে মশগুল হয় তারপর সূর্য এক ধনুক পরিমান উদিত হওয়ার পর দু রাকাআত সালাত আদায় করে তাহলে ইনশাআল্লাহ সওয়াবের ক্ষেত্রে বত্যয় ঘটবে না।
অনুরূপভাবে অসুস্থ জনিত কারণে যদি যদি নামাযের স্থানে বসে থাকা সম্ভব না হয় তাহলেও নিয়তের কারণে পূর্ণ সওয়াব অর্জন করবে ইনশাআল্লাহ। কেননা, হাদীসে এসেছে- « ﺇﺫﺍ ﻣﺮﺽَ ﺍﻟﻌﺒﺪُ ﺃﻭ ﺳﺎﻓﺮ، ﻛُﺘﺐ ﻟﻪ ﻣﺜﻞ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻳﻌﻤﻞ، ﻣﻘﻴﻤﺎً ﺻﺤﻴﺤﺎ ». “বান্দা অসুস্থ হলে বা সফর করলে (তার আমলনামায়) ঐ সওয়াব লেখা হবে সুস্থ ও অবাস অবস্থায় যে সওয়াব লেখা হত।”(সহীহুল জামে, হা/৭৯৯) তবে কেউ যদি একান্ত অপরিহার্য কাজ ছাড়া ঘর-সংসার, বা অন্য দুনিয়াবী কাজে লিপ্ত হয়ে যায় আর কাজ সেরে এসে দু রাকাআত সালাত আদায় করে তাহলে উক্ত হাদীসে বর্ণিত সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। কিন্তু সাধারণ নফল ইবাদত হিসেবে সওয়াব পাবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহু আলাম।