3.41K দেখা হয়েছেআকিদা
0

ফতোয়া কি ও কেন ?

Loading

Arab Light Online Madrasa এটি প্রকাশ করেছে এপ্রিল 25, 2021
একটা মন্তব্য যোগ করুন

1 উত্তর

0
বর্তমান সমাজে ফতোয়া মানুষের মুখে এবং জীবনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় এবং প্রয়োজনীয় জিনিস ৷
এজন্য বলা হয় যেদিন থেকে ইসলাম সেদিন থেকেই ফতোয়া।
ফতোয়া থাকবে তাহলে ইসলাম থাকবে ফতোয়া নেই ইসলাম নেই ৷ ফাতোয়া ছাড়া একজন মানুষ মুহূর্তের জন্য মুসলমান, মুমীন থাকতে পারে না ৷
সর্বপ্রথম মুফতী হলেন স্বয়ং মহান আল্লাহ ৷
তাই ফতোয়া সম্পূর্ণরূপে শরীয়ত ভুক্ত সংবেদনশীল একটি বিষয় ৷
ফতোয়া একটি পরিভাষা যার অর্থ হলো সমাজে সৃষ্ট উদ্ভুত সমস্যার সমাধানকল্পে শরীয়ত প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক মতামত বা ফয়সালা , অর্থাৎ কুরআন সুন্নাহ ভিত্তিক দ্বীনী প্রশ্নের উত্তর কে ফতোওয়া বলা হয়।
মুসলমানগন বিশ্বাস করেন এমনকি অমুসলিমগণ একথা স্বীকার করে যে ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। কালেমায়ে তাইয়্যেবা উচ্চারণ এর মাধ্যমে একজন মুসলমান এই অঙ্গীকার ও শপথ গ্রহণ করে যে সে তার সমগ্র জীবন ওই আইন ও বিধান অনুযায়ী যাপন করবে।
আল্লাহ পাক কালামে পাক নাযিল করেছেন এবং রাসূল রেখে গেছেন। তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন তো বটেই এমনকি রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবনেও তাকে শরীয়তের আইন বিধান থেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং তা অক্ষরে অক্ষরে অনুসরণ করতে হবে ৷
যেহেতু বাস্তব কারণ এই উম্মাহর প্রতিটি সদস্যের পক্ষে শরীয়তের আইন ও বিধান এবং সিদ্ধান্ত আহরণ করা সম্ভব নয় সেহেতু যোগ্য অভিজ্ঞ ব্যক্তির কাছে থেকে শরীয়তের আদেশ-নিষেধ জেনে নিয়ে সে অনুযায়ী আমল করা হলো সাধারণ মুসলমানের কর্তব্য এটাও শরীয়তের বিধান ৷
মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত দৈনন্দিন জীবন সামাজিক জীবন অর্থনৈতিক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক জীবন সর্বক্ষেত্রে মানুষের অন্তহীন সমস্যার নিরঙ্কুশ সমাধান রয়েছে কোরআন হাদিসে বর্ণিত আল্লাহ প্রদত্ত আইনে ৷
সমাজের কোন না কোন ব্যক্তি এসব বিষয়ে অগাধ জ্ঞান অর্জন ও সাধারণ মুসলমান এসব বিষয়ে ধর্মীয় সমাধান চাইলে তার কোরআন-হাদিস ইজমা-কিয়াস ভিত্তিক সমাধান প্রদান করা ফরজ ৷
আল কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
যদি তোমরা না জানো তাহলে আলিমদের জিজ্ঞাসা করো ৷
তাই সমাজের কোনো না কোনো ব্যক্তির এসব বিষয়ে অগাধ জ্ঞান অর্জন ও সাধারণ মুসলমান এসব বিষয়ে ধর্মীয় সমাধান চাইলে তার কোরআন-হাদিস ইজমা-কিয়াস ভিত্তিক সঠিক সমাধান প্রদান করা ফরজ।
এই সমাধান প্রদানের নামই ফাতাওয়া।
এই ফতোয়া কোন ছেলেখেলা নয়। যতদিন এই ফতোয়ার সঠিক চর্চা ও সঠিক ব্যবহার থাকবে ততদিন মানুষ নিরাপদ থাকবে, ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকবে।
তাই যুগ যুগ ধরে ইসলাম ধর্ম ধ্বংসের নিমিত্তে মুসলমানদের কৃষ্টি-কালচার নষ্টের অপচেষ্টা বাস্তবায়নের জন্য ফতোয়াকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে অনেক খ্রিস্টান গোষ্ঠী ৷ তারা একশ্রেণীর বুদ্ধিভ্রষ্ট নামধারী মুসলমানদেরকে এর পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে ইসলামবিদ্বেষীরা মানুষের মগজ এমন ভাবে ধোলাই করেছে যে তারা আজ এই জ্ঞানটি হারিয়ে ফেলেছে যে ফতোয়া ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এর সাথে ঈমানের গভীর সংযোগ রয়েছে ৷
বলাবাহুল্য শরীয়তের বিশেষজ্ঞ আলীমকে এই ইসলামী আইনের পরিভাষায় মুফতী বলা হয় আর তিনি কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত প্রদান করেন সেটাকে ফতোয়া বলা হয় ৷
যোগ্য ও বিজ্ঞ মুফতী প্রদত্ত সেই ফতোয়া সাধারণ মুসলমানের জন্য শরীয়তের বিধান বলেই গণ্য হয় ৷
কেননা আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ আলীমকে জিজ্ঞাসা করতে বলেছেন। সুতরাং যারা না জানে তাদের কর্তব্য হলো সিদ্ধান্ত জিজ্ঞাসা করা এবং প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমল করা ৷
আর যিনি জানেন তাঁর কর্তব্য হলো – পূর্ণ আমানতের সাথে শরীয়তের বিধান বলে দেওয়া। না জানা অবস্থায় জিজ্ঞাসা না করে মনগড়া আমল করা যেমন অপরাধ, তেমনি জিজ্ঞাসিত হওয়ার পর সিদ্ধান্ত না বলা হবে কিতমানে এলম বা এলম গোপন করার অপরাধ ৷
এ সম্পর্কে হাদিসে গুরুতর সতর্কবাণী এসেছে ৷
মোটকথা ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা এবং ফতোয়া প্রদান করা হচ্ছে ইসলামী শরীয়তে অলঙ্ঘনীয় আদেশ ৷
ফতোয়া জিজ্ঞাসা করাকে শরীয়তের পরিভাষায় বলা হয় ইস্তেফতা এবং ফতোয়া প্রদানকে বলা হয় ইফতা। ফতোয়া জিজ্ঞাসা করে সে হলো মুস্তাফতী, ফতোয়া প্রদান করেন তিনি হলেন মুফতী ৷ এবং ফতোয়ার বহু বচন হলো ফাতাওয়া।
সুতরাং ফতোয়া ইসলামী শরীয়তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ যার অবর্তমানে মুহূর্তের মধ্যে ইসলামী সমাজ ও জীবন বিধান শুধু অচল হবে তাই নয় বরং হালাল-হারামের ব্যবধান মুছে গিয়ে দীন ও শরীয়তের গোটা প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে পড়বে ক্রমশ।

Loading

Arab Light Online Madrasa এটি প্রকাশ করেছে এপ্রিল 25, 2021
একটা মন্তব্য যোগ করুন
আপনার উত্তর লিখুন।

Categories

প্রশ্ন পরিসংখ্যান

  • Active
  • দৃশ্য3412 times
  • উত্তর1 উত্তর