কুরআনে কারীমের তরজমা-তাফসীর পাঠ ও তাদাব্বুর প্রসঙ্গ

 

 

আজকের আলোচনার শিরোনাম খুবই গুরুত্বপূর্ণকুরআনে কারীমের তরজমা  তাফসীর পাঠ। কিন্তু  বিষয়ে আমার নিজের পক্ষ থেকে কিছু বলা কঠিন। আমি চেষ্টা করব আমাদের পূর্বসূরি মনীষী ব্যক্তিবর্গ  বর্তমান সময়ের বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম যে আলোচনা করেছেন তা একটু গুছিয়ে উপস্থাপন করতে।

কুরআনে কারীমের তরজমা-তাফসীর পাঠ প্রসঙ্গে প্রথম যে বিষয়টা ভূমিকা হিসেবে বোঝা দরকার তা হচ্ছেআমরা কুরআনে কারীমের তরজমা-তাফসীর পাঠের দিকে কখন যাবঅন্য ভাষায় বললেকুরআন-সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের তুলনায় এই বিষয়টার গুরুত্ব কতটুকু?

প্রথমেই আমাদেরকে কুরআন সংক্রান্ত আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্যগুলোর পর্যায়ক্রম উপলব্ধি করতে হবে এবং সে অনুযায়ী অপেক্ষাকৃত বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এটা হচ্ছে প্রথম মূলনীতি।

শরীয়তে কাম্য বিষয়ের মধ্যে পর্যায়ক্রম থাকে। সেই পর্যায়ক্রম সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জন করা দরকার। যেন প্রত্যেক বিষয়কে যথাযোগ্য গুরুত্ব দেয়া যায়। এজন্য আজকের দরসের প্রথম মূলনীতি আমরা বলবকুরআন সংক্রান্ত আমাদের যে দায়িত্ব-কর্তব্যতার মধ্যে পর্যায়ক্রম উপলব্ধি করা এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।

এই মূলনীতির আলোকে একজন মুসলিমের জন্য গুরুত্বের বিচারে যে বিষয়গুলো আগে আসবে তন্মধ্যে একটি হচ্ছেকুরআনে কারীমের সহীহ তেলাওয়াত শিক্ষা করা। এমনিভাবে কুরআনে কারীমের মাধ্যমে যে আকাইদ  আহকাম অর্থাৎ যে বিশ্বাস  বিধান আমাদের কাছে এসেছে সেই আকীদা  আহকামকে সহজ  সঠিকভাবে কুরআন-সুন্নাহর বিজ্ঞ আলিমদের কাছ থেকে জেনে সে অনুযায়ী আমল করতে থাকা। এই দুইটা বিষয় সরাসরি কুরআনের তরজমা-তাফসীর পাঠের আগে আসবে। আবারো বলছিসহীহ-শুদ্ধভাবে কুরআনে কারীমের তেলাওয়াত শিক্ষা করা এবং কুরআনে করীমের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা যে আকীদা-আহকাম আমাদেরকে দান করেছেন তা সহজ-সরলভাবে ওলামায়ে কেরামের কাছ থেকে জেনে সে অনুযায়ী আমল করতে আরম্ভ করা।

এই পর্যায়ক্রম না বুঝলে শরীয়তের বিধানের দৃষ্টিকোণ থেকে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটাকে কম গুরুত্ব দেওয়া হবে এবং তা অবহেলিত হয়ে থাকবে। এরকমটা হওয়া উচিত না। যে বিষয়ের গুরুত্ব বেশিসে  বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। যে বিষয়টা আগে অর্জন করার তা আগে অর্জন করতে হবে। এটা শরীয়তের একটা স্বীকৃত মূলনীতি। সালাফের বাণীতে এই মূলনীতি স্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে। ইমাম ইবনুল জাওযী রাহ.-এর একটি কিতাব আছে ‘তালবীসে ইবলীস সেই কিতাবে তিনি বলেন-

أما العِلْمُ الّذِي يجب على الإنسانِ عَيْناً كَعِلْمِ ما أمَرَ اللهُ بِه و ما نَهى اللهُ عَنْه فهو مقدّم على حفظ ما لا يجب من القرآنِ فَإِنّ طلب العلم الأوّل واجب، و طلب الثاني مستحبّ و الواجب مقدّم على المستحب.

যে ইলম প্রত্যেক মানুষের উপর ‘ফরযে আইন’ যেমন আল্লাহ তাআলা যে বিষয়ের আদেশ করেছেন এবং যে বিষয়ে নিষেধ করেছেন তা জানা কুরআনের যে অংশ হিফয করা ওয়াজিব নয় তার চেয়ে অগ্রগণ্য। কেননা প্রথম প্রকারের ইলম অন্বেষণ ওয়াজিব আর দ্বিতীয়টি মুস্তাহাব। আর ওয়াজিব তো মুস্তাহাবের চেয়ে অগ্রগণ্য।

কুরআনে কারীম হিফয করাকুরআনের অর্থ-মর্ম বোঝা ভালো  কাম্য বিষয়কিন্তু এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কুরআনে কারীমের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা যে আদেশ-নিষেধ করেছেন তা জেনে সে অনুযায়ী আমল শুরু করে দেওয়া।

"আকিদাতুত ত্বহাবী" হলো ইমাম ত্বহাবী (রহঃ) এর একটি গ্রন্থ, যা ইসলামের আকীদা (মূল বিশ্বাস ও তত্ত্ব) সম্পর্কে তার উপদেশ ও তাত্ত্বিক প্রকাশন থাকে। এই গ্রন্থটি ইসলামিক আকীদা ও ইসলামিক ফিকহ এর বিভিন্ন সময়ে তৈরি হওয়া একটি মূলবই।

"শরহে আকাঈদ" হলো "আকাঈদতুত ত্বহাবী" এর একটি বিস্তারিত বা এর উপর একটি বিশেষ টিকা বা ভাষ্য। এই বইটি মূলগ্রন্থের সঠিক বুঝার জন্য এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরের জন্য একটি সুপ্লিমেন্টারি প্রকাশনী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

নূরুল আনোয়ার ( আরবি : نور الأنوار ; ইংরেজি : Nur-ul-Anuwar) হল ইসলামি শরিয়াতের একটি জ্ঞানশাস্ত্রীয় প্রসিদ্ধ গ্রন্থ যা উসুলে ফিকহ সম্পর্কিত। এটিতে চার প্রকারের আইনশাস্ত্রের সংজ্ঞা, বিধান রীতি রয়েছে। এর লেখক হলেন শায়খ আহমদ মোল্লা জিউন। তিনি একজন ভারতীয় মুসলিম পণ্ডিত । গ্রন্থটি মূলত ইসলামি আইনশাস্ত্রের নীতি নিয়ে প্রণীত বিখ্যাত গ্রন্থ আল-মানার-এর ভাষ্য । আর আল-মানার-এর রচয়িতা আবুল বারাকাত আবদুল্লাহ বিন আহমদ যিনি হাফিজ-উদ্দিন নাসফি নামেও পরিচিত।[১] নূরুল আনোয়ার গ্রন্থটি মোল্লা জিউন মক্কায় হজ্জের সফরে রচনা করেছিলেন ।

হিদায়া ২য় খন্ড

হিদায়া ২য় খন্ড pdf বই ডাউনলোড। আশরাফুল হিদায়া বইটি আলেম সমাজে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ তা শুধুমাত্র আলেম সমাজই ভালো জানে। কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য এই গ্রন্থটি পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয়। এটি মূলত ফিক্হ এর বই। সাধারণ পাঠকদের হাতে বইটি তুলে দেওয়ার জন্যই আরবী থেকে বাংলাতে অনুবাদ করা হয়েছে।

ইবাদত তিন প্রকার –
১. শারীরিক ইবাদত। যেমনঃ নামাজ ও রোজা
. আর্থিক ইবাদত। যেমনঃ জাকাত।
. শারীরিক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত ইবাদত। যেমনঃ হজ্জ।

আল-হিদায়াহ ফী শারয়ী বিদায়াতুল মুবতাদী ( লেখক মৃত্যু: ৫৯৩ হিজরি / ১১৯৭খ্রিষ্টাব্দ) ( আরবি : الهداية في شرح بداية المبتدي , আল-হিদায়া ফ শারী বিদীয়াত আল মুবতাদী ), সাধারণতঃ আল-হিদায়াহ [১] বানানটি নির্দেশিকা হ'ল বুরহান আল-দীন আল-মারঘিনানির দ্বাদশ শতাব্দীর আইনি ম্যানুয়াল, যা হানাফী আইনশাস্ত্রের ( ফিকহ ) অন্যতম প্রভাবশালী গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত হয়। [২]  এটি অসংখ্য ভাষ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। [৩] বইটি অ্যাংলো-মুহাম্মাদান আইন হিসাবে পরিচিত ইসলামী এবং ব্রিটিশ আইন সংশ্লেষের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।[৪]