হজ্জ ও উমরাহর সকল দোয়া
একজন মুমিন মাত্রই দিদারে বাইতুল্লাহ ও জিয়ারতে মদিনার স্বপ্ন লালন করে থাকেন। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর ঘরের পবিত্র স্পর্শ ও প্রিয় নবীজীর রওজা শরিফে সালাম জানানোর পবিত্র বাসনায় ঝড় ওঠে মুমিন বান্দার হূদয়রাজ্যে। অবশেষে প্রতীক্ষার প্রহর কাটিয়ে একসময় ডাক আসে আল্লাহর ঘরে হাজিরা দেওয়ার। সেই ডাকে লাব্বাইক বলে আমরা হাজিরা দিই পবিত্র কাবার সামনে। কিন্তু বিভিন্ন জায়গার গুরুত্বপূর্ণ দোয়া মুখস্থ না থাকায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে না প্রেম ও পুণ্যে ভরা আমাদের পবিত্র হজ। হজ্জ ও উমরাহর সকল দোয়া
এক. সফরকালীন দোয়াসমূহ-উমরাহর সকল দোয়া
১. পরিবার ও আত্মীয়দের থেকে বিদায় নিয়ে ঘর হতে বের হওয়ার সময় এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি, লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি।
অর্থ : আল্লাহতায়ালার ওপর ভরসা করে তাঁর নামেই শুরু করছি। তাঁর সাহায্য ছাড়া নেক কাজ করা ও অন্যায় কাজ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
২. বিসমিল্লাহ বলে গাড়িতে উঠে এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হাজিহি ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনীন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন।
অর্থ : পবিত্র সেই সত্তা, যিনি আমাদের জন্য এই বাহনকে বশীভূত করে দিয়েছেন। তাঁর সাহায্য ছাড়া একে বশীভূত করার ক্ষমতা আমাদের ছিল না। আমরা সকলে তাঁরই কাছে ফিরে যাব।
৩. বাসা বা বিমানবন্দর থেকে ইহরামের কাপড় পরুন এবং এই নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ আমি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হজ/ওমরার নিয়ত করেছি। তা সহজ করুন এবং কবুল করুন।’
নির্ধারিত মিকাত থেকে (সম্ভব হলে) গোসল করে অথবা অজু করে নেয়া। পুরুষরা সেলাইবিহীন ২টি কাপড় পরবে। আর নারীরা পর্দাসহ শালীন পোশাক পরবে। অতঃপর ২ রাকাআত নামাজ পড়ে ইহরামের নিয়ত করে নেবে-
اَللَّهُمَّ اِنِّي اُرِيْدُ العُمْرَةَ فَيَسِّرْهُ لِيْ وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল উমরাতা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নি’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি ওমরার ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন।’
অতঃপর তালবিয়া পড়বে (১ বার তালবিয়া পড়া শর্ত)
৪. নিয়তের পর অধিক হারে তালবিয়া পড়তে থাকুন-
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَشَرِيْكَ لَكَ
উচ্চরণ : লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা। লাব্বাইকা লা-শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক। লা শারিকা লাকা।
অর্থ : আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই। আমি হাজির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নেয়ামত আপনারই এবং সকল রাজত্ব আপনার। আপনার কোনো শরিক নেই। (বুখারী, ১৫৪৯)
তালবিয়া পড়ার ফযীলতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখনই কোনো মুসলিম (হজ্জ বা উমরাহ’র জন্য) তালবিয়া পাঠ করে, তখন তার ডান ও বাম দিকে পৃথিবী শেষ সীমা পযর্ন্ত যত পাথর, বৃক্ষ ও মাটির চাকা রয়েছে, সব কিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে। (তিরমিযী, ১:১৭০/ইবনু মাজাহ, পৃঃ ২০৯)
তালবিয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ দোয়াটিও পড়বে-
اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউ’জুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নারি’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’
৫. বিমানে ওঠার সময় উপরোল্লিখিত সফরের দোয়া পড়ুন এবং বিমান থেকে জেদ্দা বিমানবন্দর নজরে এলে এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খায়রা হাজিহিল কারয়াতি ওয়া খায়রা মা ফিহা, ওয়া আউজুবিকা শারবাহা ওযা শাররা মা ফীহা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এই শহরের এবং এর অভ্যন্তরস্থ সব জিনিসের মঙ্গল কামনা করছি। এবং এর ও এর অভ্যন্তরস্থ সব অকল্যাণ হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৬. জেদ্দায় অবতরণের সময় এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : রাব্বি আদখিলনী মুদখালা সিদকিউঁ ওয়া আখরিজনি মুখরাজা সিদকিউঁ ওয়াজাআললী মিললাদুনকা সুলতানান নাসীরা
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক, যেখানে যাওয়া শুভ ও সন্তোষজনক, আপনি আমাকে সেখানে নিয়ে যান এবং যে স্থান হতে বের হয়ে আসা শুভ ও সন্তোষজনক, আপনি আমাকে সেখান থেকে বের করে আনুন এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাকে সাহায্যকারী শক্তিদান করুন।
৭. হারাম শরিফে প্রবেশের সময় এ দোয়া পড়ুন-
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السّلَامُ وَ مِنْكَ السَّلَامُ حَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ اَللَّهُمَّ زِدْ هَذَا الْبَيْتَ تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ تَكْرِيْماً وَ مَهَاَبَةً وَ زِدْ مَنْ شَرّفَهُ وَ كَرّمَهُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা হাজা আমনুকা ওয়া হারামুকা। ওয়ামান দাখালাহু কানা আ-মিনা ফাহাররিম লাহমি ওয়া দামি ওয়া আজামি ওয়া বাশারি আলান্নার।
অর্থ : হে আল্লাহ, এটা আপনার সুরক্ষিত পবিত্র স্থান। এখানে প্রবেশকারী যে কেউ আপনার নিরাপত্তা পায়। সুতরাং আমার গোশত, রক্ত, অস্থি ও চর্মকে আগুনের জন্য হারাম করে দিন।
৮. মসজিদে হারামে প্রবেশের সময় অন্যান্য সুন্নাত আদায় করে এই দোয়া পড়ুন-
بِسْمِ اللهِ وَ الصّلَاةُ وَ السَّلَامُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ
اَللهُمَّ افْتَحْ لِىْ اَبْوَابَ رَحَمَتِكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফির লী যুনূবী, ওয়াফতাহ লী আবওয়াবা রাহমাতিকা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার গোনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আপনার রহমতের দরজাসমূহ আমার জন্য খুলে দিন।
৯. কাবা শরিফ দেখে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ুন-
কাবা ঘর দেখে এ দোয়া পড়া-
اَللَّهُمَّ أَنْتَ السّلَامُ وَ مِنْكَ السَّلَامُ حَيِّنَا رَبَّنَا بِالسَّلَامِ اَللَّهُمَّ زِدْ هَذَا الْبَيْتَ تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ تَكْرِيْماً وَ مَهَاَبَةً وَ زِدْ مَنْ شَرّفَهُ وَ كَرّمَهُ مِمَّنْ حَجَّهُ وَاعْتَمَرَهُ تَشْرِيْفاً وَ تَعْظِيْماً وَ بِرُّا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতাস সালামু ওয়া মিনকাস সালামু হাইয়্যিনা রাব্বানা বিস্সালাম। আল্লাহুম্মা যিদ হাজাল বাইতা তাশরিফান ওয়া তা’জিমান ওয়া তাকরিমান ওয়া মুহাবাতান; ওয়া জিদ মান শার্রাফাহু ওয়া কার্রামাহু মিম্মান হাজ্জাহু ওয়া’তামারাহু তাশরিফান ওয়া তাকরিমান ওয়া তা’জিমান ওয়া বির্রা।
অর্থ : হে আল্লাহ, আপনার এই ঘরের বড়ত্ব, সম্মান ও মর্যাদা এবং শান শওকত বাড়িয়ে দিন। এবং হজ ও ওমরাকারীদের মধ্যে যে এ ঘরের সম্মান ও ইহতিরাম করবে, তার সম্মান, মর্যাদা, মহত্ব ও নেকি বাড়িয়ে দিন। হে আল্লাহ আপনি শান্তির মালিক, সকল শান্তি আপনার পক্ষ থেকেই। হে আমাদের রব, শান্তির সঙ্গে আমাদের বাঁচিয়ে রাখুন। (আল কিরা, ২৫৫)
হজ ও ওমরাকালীন দোয়াসমূহ
১. তাওয়াফ শুরু করার আগে হাজরে আসওয়াদের কোনায় এসে এভাবে নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজ/ওমরার তাওয়াফ করছি। আমার জন্য তা সহজ করুন এবং কবুল করুন।’
৩. তাওয়াফ শুরু করার আগে সম্ভব হলে এই দোয়া পড়ুন-
হাজরে আসওয়াদ চুম্বন, ইসতেলাম (স্পর্শ) বা হাজরে আসওয়াদ বরাবর কোনায় দাঁড়িয়ে কাবার দিকে ফিরে দুই হাত দিয়ে ইশারা করে পুরুষরা ইজতিবা ও রমলসহ আর নারীরা সাধারণভাবে তাওয়াফ শুরু করবে আর এ দোয়া পড়া-
بِسْمِ اللهِ اَللهُ اَكْبَر – اَللَّهُمَّ اِيْمَنًا بِكَ و بصديقًا بِكِتَابِكَ وَرَفَعًا بِعَهْدِكَ وَ اِتِّبَعًا لِسُنَّةِ نَبِيِّكَ
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার; আল্লাহুম্মা ইমানান বিকা ওয়া তাসদিকান বিকিতাবিকা ওয়া রাফাআন বিআহদিকা ওয়া ইত্তিবাআন লিসুন্নাতি নাবিয়্যিকা।’
অর্থ : আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি মহান। হে আল্লাহ (আমি তাওয়াফ শুরু করছি) আপনার প্রতি ঈমান এনে আপনার কিতাবকে সত্যায়ন করে এবং আপনার নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণ করে। (মাজমউয যাওয়াইদ, ৫৪৭০)। বি.দ্র. তাওয়াফে এমন কোনো নির্দিষ্ট দোয়া নেই, যা ছাড়া তাওয়াফ সহি হবে না। অতএব, যেকোনো দোয়া পড়া যাবে। তবে এখানে হাদিস ও আসার থেকে কিছু দোয়া উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো পড়া উত্তম।
৪. রসুলুল্লাহ (সা.) রুকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মাঝে এ দোয়া পড়তেন :
তাওয়াফের সময় কাবা শরিফ ও হাজরে আসওয়াদকে বাম দিকে রেখে রোকনে শামি ও রোকনে ইরাকি অতিক্রম করে রোকনে ইয়ামেনিতে আসবে। এ স্থানে তালবিয়া, তাকবির তাসবিহ ইত্যাদি পড়বে।
অতঃপর (সম্ভব হলে) রোকনে ইয়ামেনি স্পর্শ করবে। সম্ভব না হলে দূর থেকে ইশারা করে হাজরে আসওয়াদের দিকে অগ্রসর হবে এবং রুকনে ইয়ামীনী কর্ণার থেকে হাজরে আসওয়াদ এ যাওয়ার সময় রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম থেকে নিম্নোক্ত আয়াতটি পড়ার বর্ণনা রয়েছে । (আবু দাঊদ, ১:২৬০/ বাইহাকী, ৫:১৩৭)
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ [البقرة :201]
উচ্চারণ : রব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনয়া হাসানাহ ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাহ। ওয়াকিনা আজাবান্নারি।
অর্থ : হে আমাদের রব, আপনি আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দান করুন ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আমাদের জাহান্নামের আজাব হতে রক্ষা করুন। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা)।
৫. রসুল (সা.) হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইবরাহিমের মধ্যে এই দোয়া পড়তেন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা কান্নি’নী বিমা রাজাকতানী ওয়া বারিকলী ফীহি। ওয়াখলুফ আলা কুল্লি গাইবাতিন লী বিখাইর।
অর্থ : হে আল্লাহ, যে রিজিক আপনি আমাকে দান করেছেন, তাতেই আমাকে তুষ্ট রাখুন ও এতে বরকত দান করুন এবং আমার থেকে যেসব নেয়ামত দূর হয়ে গেছে এর উত্তম বদলা আমাকে দান করুন। (মুসতাদরাকে হাকেম)।
৬.পূর্ণ তাওয়াফে এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু। ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সব প্রশংসা তাঁরই। আর তিনিই সর্বশক্তিমান। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা)।
৭. জমজমের পানি পানের সময় শুরুতে বিসমিল্লাহ ও শেষে আলহামদুলিল্লাহ বলুন এবং পান করার আগে-পরে এই দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়া, ওয়া রিজকান ওয়াসিয়া, ওয়া শিফাআম মিন কুল্লি দা-য়ি।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে উপকারী ইলম, প্রশস্ত রিজিক ও সব রোগ থেকে শেফা প্রার্থনা করছি। (মানাসিক ১৩৯)।
৮. সাঈ শুরু করার আগে এভাবে নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে ওমরা/হজের সাঈ করছি। আমার জন্য তা সহজ করুন এবং কবুল করুন।’
৯. সাফা পাহাড়ে ওঠার সময় এ দোয়া পড়ুন-
সাফা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে এ আয়াত পাঠ করা-
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
উচ্চারণ : ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিন শা’আ ইরিল্লাহ, ফামান হাজ্জাল বাইতা আও ইতামারা ফালা জুনাহা আলাইহি আই ইয়াত্তাওওয়াফা বিহিমা। ওয়ামান তাতাওওয়াআ খাইরান, ফাইন্নাল্লাহা শা-কিরুন আলীম।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৮)
অর্থ : নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি বায়তুল্লায় হজ কিংবা ওমরা করবে, এই দুটির তাওয়াফে (সাঈতে) তার জন্য দোষ নেই। কেউ স্বেচ্ছায় ভালো কাজ করলে নিশ্চয় আল্লাহ পুরস্কারদাতা সর্বজ্ঞ।
এ আয়াতটি সাফা পাহাড়ের ওপরে গম্বুজের মধ্যে লেখা রয়েছে। চাইলে যে কেউ তা দেখে দেখেও পড়ে নিতে পারবেন।
– সাফা পাহাড় থেকে কাবা শরিফ দেখা যায়। কাবার দিকে ফিরে আলহামদুলিল্লাহি আল্লাহু আকবার (اَلْحَمْدُ لِلَّهِ اَللهُ اَكْبَر) বলে আল্লাহর কাছে দোয়া করা।
১০. সাফা পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে ফিরে তিনবার ‘আল্লাহু আকবর’ বলে এই দোয়া পড়ুন-
– অতঃপর এ দোয়াটি ৩ বার পড়ে সাফা পাহাড় থেকে মারওয়ার দিকে চলা শুরু করা-
لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر – لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ – لَهُ المُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْيِى وَ يُمِيْتُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيئ قَدِيْر
উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, লা-শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, য়ুহয়ী ওয়ায়ুমীত বিয়াদিহিল খায়রু, ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সকল প্রশংসা তাঁরই। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান, সব কল্যাণ তাঁর হাতে। আর তিনি সর্বশক্তিমান। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ১২১৮)
لَا اِلَهَ اِلَّا الله وَحْدَهُ أنْجَزَ وَعْدَهُ – وَ نَصَرَ عَبْدَهُ وَ هَزَمَ الأحْزَابَ وَحْدَهُ
উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু আনজাযা ওয়াহদাহু ওয়া নাসারা আবদাহু হাযাামাল আহযাবা ওয়াহদাহু।’
১১. সাফা-মারওয়ায় সাঈ করার সময় সবুজ চিহ্নিত স্থানে দ্রুত চলার সময় এই দোয়া পড়ুন-
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ الْاَعَزُّ الْاَكْرَمُ
উচ্চারণ : রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতাল আ আযযুল আকরাম।
অর্থ : হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করুন এবং দয়া করুন। আপনি মহাপরাক্রমশালী। মহাসম্মানী। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস-১৫৮০৭)
সবুজ চিহ্নিত স্থান অতিক্রম করে নারী-পুরুষ সবাই স্বাভাবিক গতিতে হাটবে। আর তাসবিহ পড়বে-
اَللهُ اَكْبَر – اَللهُ اَكْبَر- اَللهُ اَكْبَر- وَ لِلَّهِ الْحَمْدُ
اَللَّهُمَّ حَبِّبْ اِلَيْنَا الْاِيْمَانَ وَ كَرِّهْ اِلَيْنَا الْكُفْرَ وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْيَانَ وَاجْعَلْنَا مِنْ عِبَادِكَ الصَّالِحِيْنَ
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদু। আল্লাহুম্মা হাব্বিব ইলাইনাল ইমানা ওয়া কাররিহ ইলাইনাল কুফরা ওয়াল ফুসুক্বা ওয়াল ইসয়ানা ওয়াঝআলনা মিন ইবাদিকাস সালিহিন।’
সাঈর প্রত্যেক চক্করে কোরআন হাদিসে বর্ণিত যেকোনো দোয়া পড়তে থাকুন।
১২. মারওয়া পাহাড়ে আরোহন
সাফা থেকে গিয়ে মারওয়া পাহাড়ে ওঠা। সেখানে গিয়ে আবার সাফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়া। সেখানে এ দোয়া পড়া-
اَللهُ اَكْبَر – اَللهُ اَكْبَر- اَللهُ اَكْبَر- وَ لِلَّهِ الْحَمْدُ – لَا اِلَهَ اِلَّا الله وَحْدَهُ صَدَقَ وَعْدَهُ وَ نَصَرَ عَبْدَهُ وَ هَزَمَ الأحْزَابَ وَحْدَهُ – لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ
وَ لَا نَعْبُدُ اِلَّا اِيَّاهُ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ وَلَوْ كَرِهَ الْكَفِرُوْنَ – رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ الْاَعَزُّ الْاَكْرَمُ
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ ۖ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوِ اعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا ۚ وَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ
উচ্চারণ : আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদু। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু সাদাক্বা ওয়াদাহু ওয়া নাসারা আবদাহু ওয়া হাযামাল আহযাবা ওয়াহদাহু; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া লা নাবুদু ইল্লা ইয়্যাহু মুখলিসিনা লাহুদদ্বীন ওয়া লাও কারিহাল কাফিরুন। রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরাম। ইন্নাস সাফা ওয়াল মারওয়াতা মিং শাআয়িরিল্লাহি ফামান হাজ্জাল বাইতা আয়ি’তামারা ফালা ঝুনাহা আলাইহি আঁইয়্যাতত্বাওয়াফা বিহিমা ওয়া মাং তাত্বাওওয়াআ খাইরান ফাইন্নাল্লাহা শাকেরুন আলিম।’
সাফা পাহাড়ে আসার সময়ও সবুজ চিহ্নিত স্থানে আগের নিয়মে পুরুষরা দ্রুত আর নারীরা স্বাভাবিকভাবে হেটে হেটে আসবে পূর্বোল্লিখিত দোয়া পড়া-
رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَ اَنْتَ الْاَعَزُّ الْاَكْرَمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতাল আআযযুল আকরাম।’
১২. সাঈ শেষ হলে এ দোয়া পড়া-
رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الَعَلِيْمُ – وَ تُبْ عَلَيْنَا اِنَّكَ اَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحَيْمُ –
وَ صَلَّى اللهُ تَعَالَى عَلَى خَيْرِ خَلْقِهِ مُحَمَّدٍ وَّاَلِهِ وَ اَصْحَابِهِ اَجْمَعِيْنَ وَارْحَمْنَا مَعَهُمْ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা তাক্বাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাছ্ ছামিউল আলিম। ওয়অতুব্ আলাইনা ইন্নাকা আংতাত্ তাওয়্যাবুর্ রাহিম। ওয়া সাল্লাল্লাহু তাআলা আলা খাইরি খালক্বিহি মুহাম্মাদিউ ওয়া আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাইন ওয়ারহামনা মাআহুম বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’
ওমরার শেষ কাজ : মাথা মুণ্ডন করা (ওয়াজিব)
১৩. আরাফার ময়দানে বিশেষ কোনো দোয়া বা জিকির পড়া জরুরি নয়। সুবাহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবারসহ যেকোনো দোয়া ও জিকির নিজ ভাষায় করা যেতে পারে। তবে হাদিস ও আছারে এক্ষেত্রে কিছু দোয়া পড়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। যেমন :
ক) উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন কাদির। -জামে তরিমিযি, হাদিস-৩৫৮৫।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সকল প্রশংসা তাঁরই। আর তিনিই সর্বশক্তিমান।
খ) বর্ণিত আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) উকুফের সময় দোয়ার জন্য হাত তুলে তিনবার ‘আল্লাহু আকবার ওলিল্লাহিল হামদ’ বলতেন। এরপর এ দোয়া পড়তেন-
উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওলাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন কাদির। আল্লাহুম্মাহদিনী বিল হুদা ওয়া নাক্কিনী বিত তাকওয়া, ওয়াগফিরলি ফিল আ-খিরাতি ওয়াল উলা। -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদিস-১৪৯২৩
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয় তাঁর কোনো শরিক নেই। বিশ্বময় তাঁর রাজত্ব আধিপত্য। সকল প্রশংসা তাঁরই। আর তিনিই সর্বশক্তিমান। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে হেদায়েতের পথে পরিচালিত করুন। আমাকে তাকওয়ার মাধ্যমে পবিত্র করে দিন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে আমাকে ক্ষমা করে দিন।
১৪. রমি (শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ) করার সময় এ দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর, রাগামান লিশ শায়াতিন, ওয়া রিদাআন লিররাহমান, আল্লাহুম্মাজ আলহু হাজ্জাম মাবরূরান, ওয়া যানবান মাগফুরান ওয়া সা’ইয়াম মাশকুরান। ওয়া তিজারাতান লান তাবূরা।
অর্থ : সেই আল্লাহর নামে, যিনি মহান। শয়তানকে অপদস্থ করার উদ্দেশ্যে এবং মেহেরবান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমি এ কঙ্কর মারছি। হে আল্লাহ আমার হজ কবুল করুন, গোনাহরাজি ক্ষমা করুন। প্রচেষ্টাকে ফলবতী করুন এবং এই ব্যবসায়কে এমন ব্যবসায় পরিণত করুন যাতে ক্ষয় নেই।
জিয়ারতে মদিনার দোয়াসমূহ
১. সবুজ গম্বুজ নজরে পড়ামাত্র গাড়ি হতে নেমে দরুদ পড়ুন এবং এ দোয়াটি পড়ুন-
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি মাশাআল্লাহু লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ, রাব্বি আদখিলনী মুদখালা সিদকিউঁ ওয়া আখরিজনি মুখরাজা সিদকিউঁ। আল্লাহুম্মাফতাহ লি আবওয়াবা রাহমাতিকা।
অর্থ : আল্লাহর নামে (এ শহরে প্রবেশ করছি) আল্লাহ যা কবুল করেছেন। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া নেক কাজ করা এবং গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। হে আল্লাহ, আপনি আমাকে সত্য পথে প্রবেশ করান এবং সত্য পথেই বের করে আনুন। হে আল্লাহ আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন।
২. রওজা শরিফের কাছে এসে এভাবে সালাম পেশ করুন-
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
অর্থ : হে আল্লাহর রসুল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত।
৩. অধিক হারে দরুদ ও কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করুন এবং নবীজীর সামনে আল্লাহর নিকট তাওবা ইস্তেগফার পাঠ করুন।
ইস্তেগফার : আস্তাগফিরুল্লাহা মিন কুল্লি যানবিও ওয়া আতুবু ইলাইহি, লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
অর্থ : আমি আল্লাহর নিকট সব গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আমি তাঁরই অভিমুখী হই। মহান পরাক্রমশালী আল্লাহর সাহায্য ছাড়া নেক কাজ করা ও অন্যায় কাজ হতে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।
৪. অতঃপর রসুলের (সা.) শাফায়াত কামনা করুন। এভাবে বলুন-
উচ্চারণ : ইয়া রসুলুল্লাহ, সামি’তুল্লাহা ইয়াকুলু-“ওয়ালাও আন্নাহুম ইয যালামু আনফুসাহুম, জা-উকা, ফাস্তাগফারুল্লাহা ওয়াস্তাগফারা লাহুমুর রসুলু-লাওয়াজাদুল্লাহা তাওওয়াবার রাহীমা।” কাদ জি’তুকা মুস্তাগফিরান মিন যুনূবী। মুস্তাশফিআন বিকা ইলা রাব্বি।
অর্থ : ইয়া রসুলুল্লাহ আমি শুনেছি আল্লাহতায়ালা বলেন, আর যদি তারা নিজেদের ওপর জুলুম করার পর আপনার নিকট উপস্থিত হতো এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাইত এবং রসুল ও তাদের জন্য ক্ষমা চাইতেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে তাওবা কবুলকারী, করুণাময় পেত। তাই আপনার কাছে আমি এসেছি, আল্লাহর নিকট তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনাকারী হয়ে এবং আমার রবের কাছে আপনার সুপারিশ কামনাকারী হয়ে।
৫. হজরত আবু বকর (রা.)-এর মাজারের সামনে এসে সালাম পেশ করুন-
উচ্চারণ : আস সালামু আলাইকা ইয়া খলিফাতা রাসুলিল্লাহ। ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। জাযাকাল্লাহু আন্না খায়রাল জাযা।
অর্থ : হে আল্লাহর রসুলের খলিফা, আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। এবং আমাদের পক্ষ থেকে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
৬. হজরত উমর ফারুক (রা.)-এর মাজারের সামনে এসে সালাম পেশ করুন-
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকা ইয়া আমীরাল মু’মিনীন, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। জাযাকাল্লাহু আন্না খায়রাল জাযা।
অর্থ : হে আমিরুল মুমিনীন, আপনার প্রতি সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক। এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত। এবং আমাদের পক্ষ থেকে আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
৭. আল্লাহ তায়ালার ফেরেশতাদের ওপর সালাম দিয়ে বলুন-
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকা ইয়া সায়্যিদানা জিবরাঈল, আসসালামু আলাইকা ইয়া সায়্যিদানা মিকাঈল, আসসালামু আলাইকা ইয়া সায়্যিদানা ইসরাফিল, আসসালামু আলাইকা ইয়া সায়্যিদানা আজরাঈল, আসসালামু আলাইকুম ইয়া মালায়িকাতাল মুকারবাবিনা, মিন আহলিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদিনা কাফফাতান, আ-ম্মাতান আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
অর্থ : হে আমাদের সরদার জিবরাইল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। হে আমাদের সরদার মিকাঈল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। হে আমাদের সরদার ইসরাফিল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। হে আমাদের সরদার আজরাইল, আপনার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। আসমান ও জমিনে বসবাসকারী আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত হে ফেরেশতাগণ, আপনাদের সবার প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। এবং বর্ষিত হোক আল্লাহর রহমত ও বরকত।
৮. জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে সাহাবিদের নাম নিয়ে সালাম পেশ করুন। এরপর সকলকে উদ্দেশ করে বলুন-
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়ারি মিনাল মুমীনিন ওয়াল মুসলিমীন। ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন। নাসআলুল্লাহা লানা ওয়া লাকুম আফিয়া। জাযাকুমুল্লাহু আন্না খায়রাল জাযা।
অর্থ : হে পবিত্র স্থানের মুমিন ও মুসলমান অধিবাসীগণ, আপনাদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক। আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব। আমরা আল্লাহর কাছে আপনাদের ও আমাদের সকলের জন্য মাগফিরাত কামনা করছি। আমাদের পক্ষ হতে আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন।
৯. হজ-ওমরা থেকে ফেরার সময় এ দোয়া পড়ুন-
উচ্চারণ : লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু। লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু। ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। আ-য়িবুনা, তা-ইবুনা সাজিদুনা লিরাব্বিনা হামিদুনা। সাদাকাল্লাহু ওয়াদাহু ওয়া নাসারা আবদাহু ওয়া হাযামা আহযাবা ওয়াহদাহু।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তাঁর কোনো শরিক নেই। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও প্রশংসা এবং তিনি সব কিছুর ওপর সামর্থ্যবান। আমাদের পালনকর্তার কাছে আমরা আবার ফিরে আসব, তাঁরই কাছে আমরা অভিমুখী হই এবং তাঁর প্রতি সিজদা আদায় করি। আল্লাহ তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন এবং বান্দাকে সাহায্য করেছেন। -সহীহ বুখারী, হাদিস-১৭৯৭
হজের সময় মক্কা-মদিনায় দোয়া কবুলের বিশেষ স্থানসমূহ
১. মাতাফ-তাওয়াফের জায়গা। ২. মুলতাযাম-কাবা ঘরের দরজা ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থান। ৩. মীযাবে রহমতের নিচে। ৪. জমজম কুয়ার কাছে। ৫. মাকামে ইবরাহিমের পেছনে। ৬. সাফা-মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের উপরে। ৭. রুকনে ইয়ামানি ও হাজরে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে। ৮. মিনার মসজিদসমূহে ও মিনার ময়দানে। ৯. মুজদালিফা ও আরাফাতের ময়দানে। ১০. জাবালে রহমত, জাবালে নূর ও জাবালে সাওরে। ১১. কংকর মারার স্থানে। ১২. রিয়াযুল জান্নাতে।